মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুরে পুলিশের ওপর নৌ-ডাকাত দলের গুলি ও ককটেল হামলার ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত টানা গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণের পর মঙ্গলবার দুপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানের ঘোষণা দেয় পুলিশ। এতে র্যাব, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের প্রায় ২০০ সদস্য অংশ নেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলম সরকার বলেন, “নদী বা লোকালয়ে ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।” এদিকে গজারিয়া থানায় ৫০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলায় নৌ-ডাকাত পিয়াস সরকারকে প্রধান আসামি ও নয়নকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরো ২০-৩০ জন অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত জামালপুর এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প-সংলগ্ন মেঘনা নদীতে পুলিশের সঙ্গে ডাকাত দলের সদস্যদের শতাধিক গুলিবিনিময় হয়। এতে আতঙ্কে স্থানীয় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং রাস্তাঘাটে জনশূন্যতা দেখা দেয়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি উজ্জ্বল দেওয়ান গণমাধ্যমকে জানান, “গ্রামের মানুষ আতঙ্কে ঘরে অবস্থান করছে। পুলিশ ক্যাম্পে হামলার পরও ডাকাতদের কেউ আটক হয়নি। যেকোনো সময় ফের হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মেঘনা নদীতে নৌ-ডাকাত নয়ন, পিয়াস, রিপন ও বাবলা বাহিনীর আধিপত্য রয়েছে। এসব বাহিনী অপহরণ, ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত। গত এক মাস আগে ডাকাতদের গুলিতে নিহত হন জেলেনেতা আবদুল মান্নান ও হৃদয় আহমেদ নামে দুইজন।
মঙ্গলবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. ফিরোজ কবির জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ডাকাত-সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, “গুয়াগাছিয়ার সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হলেও পুলিশ তাদের পাশে রয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে।”
এদিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত পুলিশের অস্ত্র লুট হওয়ার খবরটি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি জানান, “অস্ত্র উদ্ধার না করা পর্যন্ত এ ধরনের তথ্য নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।”
উল্লেখ্য, হামলার পর থেকে জামালপুর ও শিমুলিয়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।