ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৯ মে ২০২৫
  1. আন্তর্জাতিক
  2. এক্সক্লুসিভ সংবাদ
  3. খেলাধূলা
  4. গ্যালারি
  5. জাতীয়
  6. জেলার সংবাদ
  7. ফিচার
  8. মতামত
  9. রাজনীতি
  10. শিক্ষা
  11. সাহিত্য ও সংস্কৃতি

অতীশের ভিটা: চলচ্চিত্রের অতীশ অন্বেষণ

নির্তেশ সি দত্ত
মে ২৯, ২০২৫ ৩:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাঙালি পণ্ডিত ও দার্শনিক শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপংকরের জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রথম চলচ্চিত্র ‘অতীশের ভিটা (Atisha’s World)’। চলচ্চিত্রটি অতীশ দীপংকরকে বিশ্বব্যাপী ভিজুয়ালি উপস্থাপনের একটি প্রয়াস। ২০২৩ সালে ‘একবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে’ অতীশের ভিটা চলচ্চিত্রটি অফিসিয়াল সিলেকশন পায় এবং এই উৎসবে দেশি-বিদেশি দর্শকের জন্য পরপর দুই দিন (২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে এবং পরেরদিন ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে) প্রদর্শনের মধ্যদিয়ে এই যাত্রা শুরু হয়ে। দেশীয়ভাবেও চলচ্চিত্রটির কয়েকটি প্রদর্শনী হয়েছে। শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপংকরকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বিহার রাজ্যের নালন্দা, ভাগলপুরের বিক্রমশীলা ও নেপালের কাঠমান্ডুর থামেলস্থ থামবাহি (Tham Bahi) বিহার, কোপান বিহার (Kopan Monastery), পোখরার পিসপ্যাগোডা, লুম্বিনীতে গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থানে চিত্রায়িত হয়েছে।

চলচ্চিত্রটি নির্মাণের একটি দীর্ঘ অভিযাত্রা আছে। ২০১৬ সালের শেষের দিকে সাংবাদিক শহীদ ই হাসান তুহিনভাইয়ের সাথে অতীশকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ক আলোচনার প্রথম দিনেই তুহিনভাই তাঁর বইয়ের সংগ্রহ থেকে ড. হাস্না জসিমউদদীন মওদুদ সম্পাদিত এবং বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ কর্তৃক ২০০৪ সালে প্রকাশিত ‘Celebration of One Thousand and Twenty Fourth Birth Anniversary of the Venerable Buddhist Scholar Atish Dipankar Srijnan নামে একটি স্মারক গ্রন্থ খুঁজে বের করেন। বলা যায়, সেদিন থেকেই চলচ্চিত্রটি নির্মাণে আমাদের গবেষণা শুরু হয়ে যায়। শরৎচন্দ্র দাস প্রণীত ‘Indian Pandits in the Land of Snow, ড. অলকা চট্টোপাধ্যায়ের ‘Atisa and Tibet’ জর্জ এন রোয়েরিক (George N. Roerich) অনূদিত ‘The Blue Annals’ এবং ড. অলকা চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত এবং ১৯৮৩ সালে Atish Dipankar Millennium Birth Celebration Committee, India কর্তৃক প্রকাশিত ‘Atish Dipankar Millennium Birth Commemoration Volum’ আমাদের গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ‘The Blue Annals’ নামে অনূদিত সুবিশাল ঐতিহাসিক আদি গ্রন্থটির মূল রচয়িতা তিব্বতের গোই লোচাবা যা ১৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে তিব্বতি ভাষায় প্রকাশিত হয়।

১৮৯৩ সালে প্রকাশিত Indian Pandits in the Land of Snow গ্রন্থে শরৎচন্দ্র দাস অতীশ দীপংকরের যে বায়োগ্রাফি প্রকাশ করেন ‘অতীশের ভিটা’ নির্মাণে তা অনুসরণ করা হয়েছে। অতীশ দীপংকর বিক্রমশীলা থেকে তিব্বত চলে যাওয়ার পরে বহির্শক্তির আক্রমণে এবং ধর্মীয় রাজনীতির পালাবদলের ফলে বৌদ্ধবিহারসমূহ ধ্বংস করে সমস্ত বইপত্র দলিল দস্তাবেজ পুড়িয়ে ফেলায় দ্বাদশ শতক থেকে অতীশ দীপংকর আমাদের ইতিহাস থেকে হারিয়ে যায়। অতীশের তিব্বত গমনের প্রায় ৮ শতাধিক বছর পরে শরৎচন্দ্র দাস তিব্বতের লাসায় নিয়েথাং (Nyethang Temple) মন্দিরে হারিয়ে যাওয়া বাঙালি দার্শনিক অতীশ দীপংকরকে পুনআবিষ্কার করেন। ১৯০৯ সালে প্রকাশিত শরৎচন্দ্র দাসের Autobiography (Narrative of the Incidents of My Early Life) থেকে জানা যায়, শরৎচন্দ্র দাস ১৮ জুলাই ১৮৪৯ সালে ব্রিটিশ ভারতের চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্সি কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ১৮৭৪ সালে শারীরিক অসুস্থতার সময়ে হাওয়া বদলের জন্য দার্জিলিং গেলে ব্রিটিশ সরকার শরৎচন্দ্র দাসকে দার্জিলিংয়ের ভুটিয়া বোর্ডিং স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত করেন। সেখানে একজন তিব্বতি শিক্ষক লামা উগ্যেন গায়াতসো’র সাথে প্রথম ১৮৭৯ সালে পরে দ্বিতীয়বার ১৮৮১ সালে শরৎচন্দ্র দাস তিব্বত সফর করেন। তিব্বত সফরকালে তিনি বিভিন্ন বৌদ্ধমঠে বহু প্রাচীন গ্রন্থের সন্ধান পান এবং তিব্বতি ও সংস্কৃত গ্রন্থের একটি বিশাল সংগ্রহ নিয়ে দার্জিলিং ফিরে আসেন। সেসব পাঠে শরৎচন্দ্র দাস তিব্বতি ভাষা ও সংস্কৃতিতে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তিনি অতীশ দীপংকরের পূর্বে আরো ত্রিশজনের অধিক ভারতীয় পণ্ডিতের তিব্বতে অবস্থানের তথ্যের সন্ধান পান এবং Indian Pandits in the Land of Snow গ্রন্থে তাদের সাথে প্রথম অতীশ দীপংকরের বায়োগ্রাফি লিপিবদ্ধ করেন।

২.
গবেষণা শেষে প্রয়োজনীয় পেপারস (সিনোপসিস, ট্রিটমেন্ট, লাইনআপ, শুটিং ডিসাইন ইত্যাদি) তৈরি করে প্রফেশনাল ক্যামেরা ইউনিট নিয়ে ২০১৭ সালের মার্চে আমাদের শুটিং শুরু হয়। বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে অতীশ দীপংকরের জন্মস্থান প্যাগোডায় প্রথম শুটিং। ৯৮২ খ্রিস্টাব্দে অতীশ দীপংকর বজ্রযোগিনীর এক হিন্দু রাজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রাজা কল্যাণশ্রী আর মাতার নাম রাণী প্রভাবতী। অতীশের পারিবারিক নাম চন্দ্রগর্ভ। বজ্রযোগিনীতেই তাঁর বড় হওয়া, প্রাথমিক পড়াশোনা। স্থানীয় লোকজন অতীশের জন্মস্থানকে এখনো ‘পণ্ডিতের ভিটা’ নামে ডাকে। সম্প্রতি অতীশের জন্মস্থানে একটি মন্দির, একটি প্যাগোডা, একটি অডিটোরিয়াম, একটি লাইব্রেরি ও মিউজিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিদিন দেশি-বিদেশি বহু দর্শনার্থী অতীশের জন্মস্থান পরিদর্শন করতে বজ্রযোগিনীতে আসেন।

প্রথম কিস্তির দুই দিনে অতীশ দীপংকরের জন্মস্থান ছাড়াও বিক্রমপুরে সদ্য আবিষ্কৃত রঘুরামপুর গ্রামের বিক্রমপুর বিহার ও নাটেশ্বর গ্রামের বিহার কমপ্লেক্সে শুট করা হয়। সেসময় অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, লেখক-গবেষক ড. নূহ আলম লেনিন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তফিজুর রহমানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে আরো কয়েকবার অতীশের জন্মস্থান কেন্দ্রিক বিভিন্ন কার্যক্রম, রিচুয়াল ও অনুষ্ঠানাদি শুট করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের তৎকালীন সভাপতি সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের, সংঘের সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপক লেখক-গবেষক ড. রায়হান রাইনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।

লেখক গবেষক ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া ও শুদ্ধানন্দ মহাথের মহোদয়ের আরো একটি বিস্তারিত সাক্ষাৎকার ঢাকার বাসাবোতে প্রতিষ্ঠিত বৌদ্ধ বিহারে শুট করা হয়। আগস্ট মাসে বর্তমান নওগাঁ জেলাস্থ পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল কর্তৃক অষ্টম শতকে নির্মিত সোমপুর মহাবিহার, বগুড়া জেলার পৌণ্ড্র রাজধানী মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল এবং নভেম্বরে কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতিতে অবস্থিত খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে দেববংশের চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব কর্তৃক নির্মিত শালবন মহাবিহারে শুটিং হয়। এরপরে আমরা ভারতের বিহার প্রদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিই।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে আমাদের ভারতের বিহার জার্নিটি বেশ স্মরণীয়। ৫ জনের ছোট ইউনিট নিয়ে প্রথম দুইদিন কলকাতায় অবস্থান করে তৃতীয় দিন ভোরে ট্রেন যোগে বিহারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। ট্রেন বিকেলে বখতিয়ারপুর স্টেশনে পৌঁছায়। সেখান থেকে সন্ধ্যায় নালন্দা জেলার হেডকোয়ার্টার বিহারশরিফ পৌঁছে সেখানকার হোটেলে রাত্রিযাপন করে পরের দিন সকালে নালন্দা মহাবিহারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। ঘন্টাখানেকের মধ্যে আমাদের গাড়ি নালন্দা খান্ডার এসে পৌঁছে। খান্ডার ওদের লোকাল ভাষা, নালন্দা মহাবিহারের প্রত্নতাত্ত্বিক এরিয়াকে এলাকার লোকজন খান্ডার বলে। এই সময়ের মধ্যেই খান্ডার এলাকায় বহু পর্যটকের ভিড় লেগে গেছে। টিকিট কেটে আমরা ভেতরে প্রবেশ করি। ভেতরে বিশাল বিস্তীর্ণ এরিয়া। সমস্ত জায়গাজুড়ে নালন্দা বিহারের অগণিত ভবনের ভগ্নাবশেষ। গাইড আমাদের বিস্তারিত বর্ণনা করে বুঝিয়ে দেয়, আমরা ছবি তুলি। সপ্তম শতকে ভারত ভ্রমনের সময় চিনের মহাপরিব্রাজক ও দার্শনিক হিউয়েন সাং নালন্দা বিহারের যেখানে থাকতেন সেখানে পৌঁছে আমরা আপ্লুত হয়ে যাই। দেয়ালে স্বর্ণাক্ষরে হিউয়েন সাংয়ের নাম লেখা। নালন্দা মহাবিহারের অদূরেই চিনা পণ্ডিত হিউয়েন সাংয়ের ভারত ভ্রমণ স্মরণে ১৯৮৪ সালে নির্মিত হয় Hiuen Tsang Memorial Hall and Museum. মেমোরিয়াল হলটি শুট করার সুযোগ আমাদের হয়েছিল।

শোনা যায় নালন্দা মহাবিহারে অতীশ দীপংকর পড়াশোনা করেছেন, এখানেই তিনি বুদ্ধত্ব গ্রহণ করেন, এখানেই তাঁর ‘অতীশ’ উপাধি প্রাপ্তি। এখান থেকেই তাঁর উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে সুবর্ণদ্বীপ যাত্রা।

সুবর্ণদ্বীপে, বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় অতীশ দীপংকর ১২ বছর অধ্যয়ন করেন। সুমাত্রায় এখনো তাঁর আবাসিক মন্দির Muara Jambi Temple সংরক্ষিত আছে। সে মন্দির প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক পরিদর্শক করেন। সুবর্ণদ্বীপে ১২ বছর উচ্চশিক্ষা শেষে অতীশ আবার ভারতের বৌদ্ধগয়ায় ফিরে আসেন। ১০২৫ সালে মগধের রাজা নয়পালের আগ্রহে অতীশ বিক্রমশীলা মহাবিহারে অধ্যাপনা শুরু করেন এবং অচিরেই তিনি মহাবিহারের আচার্য পদে অধিষ্ঠিত হন।
নালন্দার কাজ শেষ করে পরের দিন বিক্রশশীলার উদ্দেশ্যে ট্রেনে করে আমরা প্রথমে ভাগলপুর শহরে পৌঁছাই। সেখানে থেকে বিক্রমশীলা মহাবিহার পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়ি। বিক্রমশীলায় বিশাক এলাকাজুড়ে বিশাল বিহারের ধ্বংসস্তুপ। মাঝখানে পদ্মাকৃতি ভগ্ন মন্দির, একপাশে অজস্র স্তুপা, এখানে সেখানে পাথর কাটা পিলার ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। চারদিকে বিস্তীর্ণ সবুজের সমারোহ, পেছনে পাহাড়, অদূরেই। দীর্ঘ ১৫ বছর অতীশ দীপংকর বিক্রমশীলা মহাবিহারে অধ্যাপনা করেছেন। সেসময় রাজা নয়পালের সময়ে মগধ ও কলিঙ্গের সম্ভাব্য যুদ্ধ থামিয়ে শান্তিচুক্তিসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। তিব্বতের রাজার আমন্ত্রণে এখান থেকেই অতীশ দীপংকর ১০৪০ সালে তিব্বত যাত্রা করেন। তিব্বত যাত্রায় অতীশ দীপংকর তৎকালীন নেপালের রাজার আমন্ত্রণে এক বছরের অধিক সময় নেপালে অবস্থান করেন। অতীশের প্রতি মুগ্ধ হয়ে রাজা তাঁর আবাসের জন্য ছোট একটি বিহার নির্মাণ করে দেন। ১০৪২ সালে অতীশ দীপংকর তিব্বতের ঞারিতে পৌঁছান। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ধর্মদর্শন সংস্কার, গ্রন্থাদি রচনা ছাড়াও অতীশ দীপংকর তিব্বতে ভারতীয় ভেষজ চিকিৎসা ও কৃষি কাজের জন্য ভারতীয় সেচ ব্যবস্থার প্রচলন করে। ১০৫৪ সালে অতীশ দীপংকর লাসার দক্ষিণে নিয়েথাং মন্দিরে মৃত্যু বরণ করেন। তিব্বতবাসী পরম শ্রদ্ধায় অতীশকে জো-বো-রজে (Jo-bo-Rje) বা মহাপ্রভূ নামে অভিহিত স্মরণ করেন।

আমাদের পরবর্তী গন্তব্য তখন নেপাল। ২০১৯ সালের অক্টোবরে আমরা ক্যামেরা সেটআপ নিয়ে নেপালে যাত্রা করি। কাঠমান্ডুতে হাজার হাজার বিহারের মধ্যে অতীশ দীপংকরের জন্য নির্মিত বিহারটি খুঁজে পেতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়। পরে কাঠমান্ডুর প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের সহযোগিতায় Tham Bahi নামের বিহারটি খুঁজে পাই। থামেলে আমাদের হোটেলের কাছেই, পায়ে হাঁটা দূরত্বে ছিল সেই বিহারটি। প্রাচীন এই বিহারটিকে Bhagawan Bahi বা Dharmdhatu Mahavihara নামেও অভিহিত করা হয়। সেই বিহারে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান পুরোহিতের একটা ইন্টারভিউ করি সেই শুটিংয়ে। পরে পোখরার পিসপ্যাগোডা আর লুম্বিনী নগরে গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থানও শুট করি।

৩.
ততদিনে আমরা শুটিংয়ের দুই তৃতীয়াংশ কাজ শেষ করে নিয়েছি। বাকী শুধু ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা আর তিব্বতের লাসা শুটিং। সেসময় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিদেশ ভ্রমনে নানা জটিলতা তৈরি হয়। এছাড়া ফান্ড সংগ্রহেও সমস্যা হয়। বাজেট ঘাটতির জন্য ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা আর তিব্বতের লাসার অংশ বাকি রেখেই চলচ্চিত্রটির একটি ভার্শন তৈরি করা হয়। সামনে ফান্ড এরেঞ্জ হলে অবশিষ্ট ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা আর তিব্বতের লাসায় অংশের শুটিং সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্রটি নির্মাণের আশা রাখি।

লেখক: সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা