ঢাকাবুধবার , ২১ মে ২০২৫
  1. আন্তর্জাতিক
  2. এক্সক্লুসিভ সংবাদ
  3. খেলাধূলা
  4. গ্যালারি
  5. জাতীয়
  6. জেলার সংবাদ
  7. ফিচার
  8. মতামত
  9. রাজনীতি
  10. শিক্ষা
  11. সাহিত্য ও সংস্কৃতি

২৫০শয্যা মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল: অ্যাম্বুলেন্স সংকট, উঠছে সিন্ডিকেটের অভিযোগ

হাসান জুয়েল
মে ২১, ২০২৫ ৬:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মুন্সীগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল জেলার সর্ববৃহৎ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন জেলার ছয়টি উপজেলা ও আশপাশের অঞ্চল থেকে অসংখ্য রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যাম্বুলেন্স সংকট।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বর্তমানে তিনটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে সচল আছে মাত্র একটি। বাকি দুটি দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এছাড়া আরও দুটি অ্যাম্বুলেন্স ২০২২ সালে অকেজো ঘোষণা করা হয় এবং নিলামের জন্য তোলা হয়। সেগুলোর সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৪৮ হাজার টাকা পর্যন্ত।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরনো ও জীর্ণ এসব গাড়ি মেরামতের খরচ সরকার অনুমোদন করবে না, তাই সচল একটি অ্যাম্বুলেন্সেই রোগী পরিবহনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পড়ে গেছে।
দুই চালকের আঁতাত:
বর্তমানে সচল একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটির চালক হিসেবে রয়েছেন মোহাম্মদ জসিম ও মনির মুন্সী। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, এই দুই চালক বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিকদের সঙ্গে আঁতাত করে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা সরকারি অ্যাম্বুলেন্সকে অপ্রাপ্য বা ব্যস্ত বলে দেখিয়ে রোগীদের প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে বাধ্য করেন। এতে করে অনেক সময় গরিব রোগীরা অতিরিক্ত খরচের বোঝা বইতে বাধ্য হন।
নির্ধারিত ভাড়া নেই, নেই রশিদও:
সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য নির্দিষ্ট ভাড়া তালিকা নেই। রোগীদের কাছ থেকে চালকরা যার যার ইচ্ছেমতো টাকা নেন এবং কোনো ধরনের রশিদ বা প্রাপ্তির স্বীকৃতি দেন না।
একজন রোগীর স্বজন বলেন, “সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে উঠেও টাকা দিতে হয়েছে আড়াই হাজার , কিন্তু কোনো রশিদ দেয়নি। বলেছে ‘এটাই নিয়ম’।”
তদন্ত, বদলি এবং আদালতের স্থগিতাদেশ
তত্ত্বাবধায়ক ডা. আহাম্মদ কবীর জানান, “চালকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হয়েছে। তদন্ত শেষে তাদের বদলির সুপারিশ করা হয় এবং বদলিও করা হয়। কিন্তু তারা হাইকোর্টে রিট করলে পাঁচ মাসের জন্য আদেশ স্থগিত হয়ে যায়।”
ফলে তারা আগের মতোই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
আবেদন না করেই অপেক্ষা
সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয়, হাসপাতালটি এত বড় সংকটে থাকা সত্ত্বেও নতুন অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কোনো আবেদন জমা দেওয়া হয়নি।
ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, “আমরা তথ্য নিয়মিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সফটওয়্যারে আপলোড করি। সরকার জানে আমাদের অবস্থা। তাই আলাদা করে আবেদন করেও লাভ নেই। বরাদ্দ এলেই আমাদের জানানো হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মত ও স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, একটি জেলার প্রধান সরকারি হাসপাতালে একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স থাকাটা অযৌক্তিক। এর সঙ্গে যদি দুর্নীতি, সিন্ডিকেট আর অনিয়ম যুক্ত হয়, তাহলে সাধারণ রোগীরা কার্যত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত নতুন অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ, চালকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও সরকারি ভাড়ার তালিকা নির্ধারণ করে রশিদ প্রদানের বাধ্যবাধকতা চালু করতে হবে।