মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীর ওপর দ্বিতীয় মুক্তারপুর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এই প্রকল্পের অধীনে বর্তমান ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী (মুক্তারপুর সেতু)–এর পাশে আরও একটি ২ লেনের নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন (CRBC) নিজস্ব অর্থায়নে সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বর্তমানে সমীক্ষার কাজ চলমান এবং নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে ইনসেপশন রিপোর্ট দাখিল করেছে।
নতুন সেতুটি নির্মিত হলে যানবাহনের চাপ কমে আসবে এবং মুন্সীগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ আরও সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, প্রকল্পের প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (পিডিপিপি) প্রস্তুত করে তা নীতিগত অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় ও আঞ্চলিক অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
যানবাহনের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সেতুর ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্বিতীয় সেতুটি নির্মিত হলে এই চাপ হ্রাস পাবে এবং যানজটও কমবে।
এছাড়া, ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়কে নির্মাণাধীন রয়েছে পঞ্চবটি দোতলা সড়ক (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ মহাসড়ক)। যার ফলে যানবাহন চলাচল আরও গতিশীল হবে। সড়কটির নিচতলায় থাকবে লোকাল ট্রাফিকের জন্য ব্যবস্থা এবং উপরতলায় চলবে দ্রুতগতির যানবাহন।
এই দুটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। ঢাকামুখী শিল্প পণ্য পরিবহন সহজ হবে, কৃষিপণ্য দ্রুত বাজারজাত করা সম্ভব হবে এবং সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসবে।
উন্নয়নের সুফল হিসেবে মিলবে—
• যানজট ও ভোগান্তি হ্রাস,
• পরিবহন খরচ কমে আসা,
• শিল্পকারখানার প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি,
• নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি,
• পর্যটন শিল্পের প্রসার,
• আঞ্চলিক অর্থনীতিতে গতি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মুক্তারপুর দ্বিতীয় সেতু এবং পঞ্চবটি দোতলা সড়ক শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, বরং তা মুন্সীগঞ্জসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্পগুলোর সময়মতো ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।