ঢাকারবিবার , ১৮ মে ২০২৫
  1. আন্তর্জাতিক
  2. এক্সক্লুসিভ সংবাদ
  3. খেলাধূলা
  4. গ্যালারি
  5. জাতীয়
  6. জেলার সংবাদ
  7. ফিচার
  8. মতামত
  9. রাজনীতি
  10. শিক্ষা
  11. সাহিত্য ও সংস্কৃতি

মুন্সীগঞ্জে শহরেই মেডিকেল কলেজ স্থাপনের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ১৮, ২০২৫ ১:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মুন্সীগঞ্জ জেলায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত ৭ এপ্রিল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এই উদ্যোগকে ঘিরে জেলাবাসীর মাঝে ব্যাপক আশাবাদ দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক দিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের বিবেচনায় মুন্সীগঞ্জ শহরেই কলেজ স্থাপনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। প্রাথমিকভাবে জেলা শহরের দুইটি স্থানকে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জেলা শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালসহ বিদ্যমান অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা পরিবেশ এবং প্রশাসনিক কাঠামো এই স্থানকে উপযুক্ত করে তুলেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথে
দীর্ঘদিন ধরেই মুন্সীগঞ্জবাসীর দাবির মধ্যে ছিল একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ। জেলায় প্রায় ১৬ লাখ মানুষ বসবাস করলেও এখনও উন্নত চিকিৎসা ও উচ্চতর স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। ফলে, রোগীদের একটি বড় অংশকে চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকায় যেতে হয়। এতে সময় ও খরচ উভয়ই বৃদ্ধি পায়। জরুরি চিকিৎসার ক্ষেত্রে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে।
শহরেই কেন স্থাপনের সম্ভাবনা বেশি?
সরকারি সূত্র বলছে, জেলা শহরেই কলেজের সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে কয়েকটি কারণে:
• জেলা সদর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা, বিদ্যুৎ, পানি ও নেটওয়ার্ক সুবিধা বিদ্যমান
• মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও আধুনিক ল্যাবরেটরি, অপারেশন থিয়েটার, আইসিইউ ইতিমধ্যে চালু
• চার লেনবিশিষ্ট সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান (ছনবাড়ি পর্যন্ত)
• শহরে নার্সিং ইনস্টিটিউট ও স্বাস্থ্যবিষয়ক অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে
প্রাথমিকভাবে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের আগ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কিছু কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে বিদ্যমান সরকারি ভবনে বা সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোতে পরিচালনার বিষয়টি নীতিনির্ধারক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এখনো চূড়ান্ত কোনো স্থান বা কাঠামো নির্ধারণ হয়নি।
রোগীদের জন্য সম্ভাব্য সুফল
সরকারি মেডিকেল কলেজ চালু হলে জেলার মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা আরও সহজলভ্য ও উন্নত হবে। হৃদরোগ, ক্যানসার, গাইনী, শিশু রোগসহ বিভিন্ন জটিল চিকিৎসা মিলবে জেলা শহরেই। তাছাড়া, চিকিৎসা সংক্রান্ত টেস্ট, স্ক্যান, ইমার্জেন্সি সেবা, ইনডোর ও আউটডোর সুবিধাও আরও আধুনিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আর্থিক ও মানসিকভাবে ভুগতে হয়। মুন্সীগঞ্জেই এই সেবা চালু হলে তা হবে জেলার মানুষের জন্য একটি “লাইফলাইন”।
শিক্ষা ও অর্থনীতিতে সম্ভাবনা
প্রতিবছর মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি হলে জেলার উচ্চশিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নের দিকটি আরও বিস্তৃত হবে। পাশাপাশি শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে তৈরি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থান।
হোস্টেল, বাসা ভাড়া, খাবার দোকান, যানবাহন ইত্যাদি খাতেও অর্থনৈতিক গতি আসবে। মুন্সীগঞ্জ শহরের ব্যবসায়ীদের মতে, একটি মেডিকেল কলেজ পুরো শহরের বাণিজ্য ও সেবাখাতের চেহারা বদলে দিতে পারে।
পরিবেশ উন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব
স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো গড়ে উঠলে তার সঙ্গে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা হয়। সবুজ ক্যাম্পাস, পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শহরের পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখাও সহজ হবে বলে মনে করছেন পরিকল্পনাবিদরা।
কী বলছে স্বাস্থ্য প্রশাসন?
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম জানান, নতুন মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য নতুন ভবন প্রয়োজন। ইতোমধ্যে শহরের মানিকপুরে অবস্থিত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও কাচারি এলাকায় অবস্থিত সদর উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসের জায়গায় মেডিকেল কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে কী কী ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে তার সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন পাঠনো হয়েছে। মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও অন্যান্য উন্নয়ন সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আগামী ১৩ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।