মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় অস্ট্রেলিয়া–বাংলাদেশ সোলার পাওয়ার লিমিটেডের উদ্যোগে স্থাপিত সোলারচালিত বাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ে আছে।
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ও তদারকি না থাকায় প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এই বাতিগুলো। রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালের অভাবে বাতিগুলো না জ্বলায় রাতের অন্ধকারে চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন হাজার হাজার পথচারী ও কর্মজীবী মানুষ।
জানা গেছে, সরকারের TR/KABITA কর্মসূচির আওতায় ২০১৯ সালে IDCOL-এর বরাদ্দ অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জ সদরে এই সোলার লাইটগুলো স্থাপন হয়েছিল। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (UPO) কার্যালয় এর তদারকির দায়িত্বে ছিল। শুরুতে এসব লাইটের আলোয় এলাকায় নিরাপত্তা ও চলাচলের সুবিধা তৈরি হলেও, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে প্রকল্পের কোনো সুফলই পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে বাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে আলো না থাকায় এলাকাতে নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে রাতে চলাচল করতেও ভয় পান অনেকে।
বাংলাবাজার ইউনিয়নের স্থানীয় দোকানদার মো: অলি মিয়া বলেন, “বাতিগুলো প্রথম দিকে ভালোই চলত। তবে কয়েক বছর ধরে প্রায় সবই নষ্ট। দেখভাল করতে কেউ আসে না। নতুন করে ঠিকও করা হচ্ছে না। গ্রাম ও বাজারসংলগ্ন সড়কগুলোতে স্থাপিত এসব লাইট স্থানীয় উন্নয়নে বড় অবদান রাখার কথা ছিল, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন তা ভেস্তে গেছে।
এদিকে গত বছরের ৪ আগস্টের পর মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কয়েকটি স্থানের ল্যাম্পপোস্ট থেকে সোলার প্যানেল ও ব্যাটারি খুলে নেওয়া হয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
অস্ট্রেলিয়া–বাংলাদেশ সোলার পাওয়ার লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিধায়ন বরুয়া বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে
২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইডকলের সোলার হোম সিস্টেমের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পাই আমরা।
তিনি বলেন, এই সময়ে ৫ শতাধিক সোলার হোম সিস্টেম এবং ৩ শতাধিক স্ট্রিট লাইটের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। টেন্ডার অনুযায়ী উপজেলা পরিষদ মোট বিলের ৯০ শতাংশ পরিশোধ করেছে, আর বাকি ১০ শতাংশ সেবা শেষ হওয়ার পর পরিশোধ করা হয়।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন এসব সোলার সিস্টেমের রক্ষণাবেক্ষণের কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান নেই। ফলে মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির ও বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপিত স্ট্রিট লাইটগুলো বর্তমানে তদারকির অভাবে বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।